সম্মানিত দর্শক আপনাকে স্বাগতম। আমাকে Facebook instagram Telegram এ পাবেন। কামরুলকক্স: যে রহস্যময় হ্রদের কাছে গেলে পাথর হয়ে যায় প্রাণীরা!

যে রহস্যময় হ্রদের কাছে গেলে পাথর হয়ে যায় প্রাণীরা!


আফ্রিকার তাঞ্জানিয়ার প্রত্যন্ত প্রান্তর | দিগন্ত জুড়ে শুয়ে আছে টকটকে লাল জমি | রং যেন রক্তকেও হার মানায় | জমি থেকে প্রতিফলিত হয়ে আসা আলোতে ধাঁধিয়ে যায় চোখভুল করে কাছে যায় পাখী এবং প্রাণীরা | অনেক সময় অত কাছেও যেতে হয় না | তার আগেই জমে পাথর হয়ে যায় তারা | কারণ ওটা কোনও জমি নয় | বরং হ্রদ | অতিরিক্ত ব্যাকটেরিয়ার জন্য যার রং লাল | প্রচুর পরিমাণে সোডা আর লবণ থাকায় তার পানি এতটাই কষ্টিক, সংস্পর্শে এলেই প্রস্তরীভূত হয়ে যাচ্ছে প্রাণীরা | মৃত্যুপুরী এই হ্রদের নাম নাট্রোন |

LakeNatron satellite labelled
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন হ্রদের পানিতে চারপাশের পাহাড় থেকে এসে জমা হয় প্রচুর ব্যাকটেরিয়া | পাশাপাশি আছে পানিতে মাত্রাতিরিক্ত ক্ষার | যার মূল উৎস সোডিয়াম কার্বোনেট | পানির Ph Balance ১০.৫| নাট্রোন হ্রদের ধার বরাবর হেঁটে গিয়েছেন ফোটোগ্রাফার নিক ব্রান্ডট | তাঁর ক্যামেরায় ধরা পড়েছে ফসিল হয়ে যাওয়া একের পর এক পাখি এবং অন্য জীবজন্তু সোডিয়াম ব্যবহার করা হত প্রাচীন মিশরে | মৃতদেহ মমি করার জন্য | সেই উপাদানের জন্য এখানেও সংরক্ষিত হয়ে থাকছে প্রাণী-দেহ| বিকৃত হচ্ছে না চেহারা | শুধু রক্ত মাংসের বদলে সে তখন পাথরের | অতিরিক্ত ক্ষারের প্রভাবে পুড়ে যাচ্ছে কিছু প্রাণীর চোখ আর চামড়া | তবে কীভাবে এবং কেন প্রাণীদের মৃত্যু হচ্ছে সে নিয়ে এখনও সম্যক ধারনা নেই বিজ্ঞানীদের |সেটা এখনও রহস্যই |

কিন্তু শুধু মৃত্যুফাঁদ নয় | এই হ্রদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে বাস্তুতন্ত্রে | কারণ এই হ্রদ এবং সংলগ্ন এলাকা বিলুপ্তপ্রায় লেজার ফ্লেমিঙ্গোদের ব্রিডিং প্লেস | ওই পানিতে থাকা ব্যাকটেরিয়াই এই পাখিদের প্রধান খাদ্য | তাছাড়া এই লোহিত হ্রদের থাকা জীবাণু-বৈচিত্রও পৃথিবীতে বিরল | হ্রদের পানি তীব্র গরম | স্বাভাবিক উষ্ণতা প্রায় ১৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট | বুকের মধ্যে রক্তবর্ণ বিষ-পানি আর প্রাণীদের পাথর-দেহ নিয়ে শুয়ে আছে প্রকৃতির মেডুসালেক নাট্রোন |



সূত্রঃ সময়ের কন্ঠস্বর, আগস্ট ১২, ২০১৪

0 মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।