চিকিৎসা
বিজ্ঞানের পরিভাষায় এই আচরণগত সমস্যাটির নাম এডিএইচডি। ছেলেকে নিয়ে মা-বাবার নাজেহাল
অবস্থা। স্কুলে শত নালিশ, সে অমনোযোগী, কোনো কাজ বা পড়া ঠিকমতো করে না, একে-ওকে মারে, অকারণে গোলমাল বাধায়। কদিন পর পর শিক্ষক মা-বাবাকে তলব করেন। ছেলেকে নিয়ে কোথাও কারও বাড়িতে
বেড়াতে যান না
ভয়ে। এই বুঝি এটা ভাঙল, ওটা ফেলল। ঘরে-বাইরে কোথাও স্থির হয়ে বসে না।
একেবারে
হাড় জ্বালানি। কিন্তু এমনটা কি আসলেই কোনো রোগ, কোনো অস্বাভাবিকতা?
চিকিৎসা
বিজ্ঞানের পরিভাষায় এই আচরণগত সমস্যাটির নাম এডিএইচডি অর্থাৎ অ্যাটেনশন ডিফিসিট হাইপার অ্যাকটিভ ডিসঅর্ডার। এর বিশেষত্ব হচ্ছে অমনোযোগ, বেহিসেবি দস্যিপনা ও
অস্থিরতা। কোনো কিছু ঠিকঠাক শোনে না, কোনো নির্দেশ ভালোভাবে
পালন করে না। কোনো কিছুতে ধৈর্য ও মনোযোগ রাখতে পারে না। একটা কাজ শেষ না করেই আরেকটি শুরু করে
দেয়। কী
কারণে সমস্যাটির উৎপত্তি রোগের কারণ বিষয়ে কোনো ঐকমত্য
প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এর
জন্য জেনেটিক দিককে দায়ী
করা
হয়। কখনো বা বিভিন্ন স্নায়ু রাসায়নিককে
সংকটসূত্র বলে চিহ্নিত করা
হয়েছে। এডিএইচডি মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের
প্রায় চার থেকে ছয় গুণের মতো
বেশি
দেখা যায়। প্রায় অর্ধেকের বেশি ক্ষেত্রে শিশুর
বয়স চার বছর হওয়ার আগেই
সমস্যাটি প্রকাশ পেয়ে থাকে। শিশু
মস্তিষ্ক বা স্নায়ুতন্ত্রের অসুখে
ভুগলে
হাইপার অ্যাকটিভ হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
কীভাবে
বুঝবেনঃ সাধারণভাবে শিশু যখন স্কুলে ভর্তি হয়
তখন সমস্যাটি নজরে আসে। গর্ভাবস্থায়
কিংবা প্রসবের সময় শিশুর মাথায় কোনো আঘাতের ঘটনা রয়েছে কি না, খুব অল্পবয়স
থেকে
বদমেজাজি কি না বা খাওয়ানো ও ঘুমের সমস্যা প্রথম থেকে শিশুর মধ্যে দেখা গেছে কি না এসব
ইতিহাস সম্পৃক্ত থাকতে পারে।
করণীয়
হাইপারঅ্যাকটিভ শিশুরা একধরনের ‘স্পেশাল চাইল্ড’। কাজেই যুক্তিগ্রাহ্য উপায়ে এই সমস্যা আয়ত্তে আনার চেষ্টা চালাতে হবে। এখনকার একক পরিবারে শিশুকে দেখাশোনার পুরো দায়িত্ব মা-বাবাকেই বহন করতে হয়, সমস্ত দুরন্তপনা আদর-আবদার অন্যদের সঙ্গে ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নেওয়ার অবকাশ আর নেই। অন্যদিকে অনেক মা-বাবাও শিশুকে যথেষ্ট সময় দেন না। তাই সে হয়ে পড়ে উপেক্ষিত, যা এই সমস্যা সৃষ্টিতে ইন্ধন জোগায়। শিশুর জন্য সুসামঞ্জস্য একটি দৈনিক রুটিন তৈরি করে নিন, যা সে স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালন করবে । এতে তাকে উৎসাহ দিতে হবে ও পুরস্কৃত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। রুটিনটি যেন সরল ও স্পষ্ট হয়। খেলার পরে, কাজের মধ্যে বিশ্রামের বন্দোবস্ত থাকা চাই।শিশুর সামান্য উন্নতি হলে কিংবা তার লেখাপড়াতে ভালো ফল হলে প্রতিনিয়ত প্রশংসা ও উৎসাহ দিতে হবে। শিশু চিকিৎসক ও স্কুলের শিক্ষকের মধ্যে নিবিড় সংযোগ থাকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এ ধরনের চিকিৎসায় আচরণ চিকিৎসা বা বিহেভিয়ার থেরাপি-ই মুখ্য।
ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী,শিশুরোগ বিভাগ,চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।
সূত্রঃ প্রথম আলো
হাইপারঅ্যাকটিভ শিশুরা একধরনের ‘স্পেশাল চাইল্ড’। কাজেই যুক্তিগ্রাহ্য উপায়ে এই সমস্যা আয়ত্তে আনার চেষ্টা চালাতে হবে। এখনকার একক পরিবারে শিশুকে দেখাশোনার পুরো দায়িত্ব মা-বাবাকেই বহন করতে হয়, সমস্ত দুরন্তপনা আদর-আবদার অন্যদের সঙ্গে ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নেওয়ার অবকাশ আর নেই। অন্যদিকে অনেক মা-বাবাও শিশুকে যথেষ্ট সময় দেন না। তাই সে হয়ে পড়ে উপেক্ষিত, যা এই সমস্যা সৃষ্টিতে ইন্ধন জোগায়। শিশুর জন্য সুসামঞ্জস্য একটি দৈনিক রুটিন তৈরি করে নিন, যা সে স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালন করবে । এতে তাকে উৎসাহ দিতে হবে ও পুরস্কৃত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। রুটিনটি যেন সরল ও স্পষ্ট হয়। খেলার পরে, কাজের মধ্যে বিশ্রামের বন্দোবস্ত থাকা চাই।শিশুর সামান্য উন্নতি হলে কিংবা তার লেখাপড়াতে ভালো ফল হলে প্রতিনিয়ত প্রশংসা ও উৎসাহ দিতে হবে। শিশু চিকিৎসক ও স্কুলের শিক্ষকের মধ্যে নিবিড় সংযোগ থাকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এ ধরনের চিকিৎসায় আচরণ চিকিৎসা বা বিহেভিয়ার থেরাপি-ই মুখ্য।
ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী,শিশুরোগ বিভাগ,চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।
সূত্রঃ প্রথম আলো
0 মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।