আমাদের অতি প্রয়োজনীয় একটি প্রযুক্তি পণ্যগুলোর অন্যতম রেফ্রিজারেটর। খাবারকে কয়েকদিন এমনকি বহুদিন পর্যন্ত ভালো রাখতে ফ্রিজের বিকল্প নেই। তবে কিছু খাদ্যদ্রব্য রয়েছে যা রেফ্রিজারেটরে রাখাটা মোটেও নিরাপদ নয়। এতে শুধু ওই খাদ্যদ্রব্যের স্বাদই কেবল বদলে যায় না, বরং স্বাস্থ্যের জন্যেও হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। যেসব খাবার ফ্রিজে রাখা ঠিক নয়, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে-
১. আলু
আমাদের নিত্য ব্যবহার্য খাবারের অন্যতম আলু। অথচ এই আলুই ফ্রিজে রাখলে এর স্বাদ ও রঙ উভয়টাই নষ্ট হয়ে যায়। এর কারণ হলো, হিমাগারে রাখা হলে আলুর স্টার্চ চিনিতে পরিণত হয়, ফলে এর স্বাদ হয়ে পড়ে মিষ্টি। এ ছাড়া আলুর চেহারা কালো হয়ে যায়, তরকারিতে তা বিদঘুটে দেখায়। আলু সংরক্ষণের সবচেয়ে ভালো পরিবেশ হলো ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় অন্ধকার স্থানে রাখা। আর এই উপায়ে এক থেকে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত আলু ভালো থাকে।
২. টমেটো
টোমেটো আরেকটি সবজি যা ঠাণ্ডা থেকে দূরে, স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখতে হয়। ফ্রিজে রাখলে টমেটোর দেয়ালের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে টমেটো নরম হয়ে যায়। কাঁচা টমেটো থাকলে তা পাকাতে না চাইলে রোদ থেকে দূরে রাখতে হবে। এর দেহত্বকে দাগ না ফেলতে চাইলে এর বোঁটা ওপরের দিকে রাখুন।
৩. পেঁয়াজ
আপনি কী ফ্রিজে পেঁয়াজ রেখে অন্যান্য খাবারের স্বাদও পেঁয়াজের মতো করে ফেলতে চান? শুধু এ কারণেই পেঁয়াজ ফ্রিজের মধ্যে রাখা উচিত নয়। অন্য কারণগুলো হলো, ফ্রিজে রাখলে পেঁয়াজ নরম হয়ে যাবে। সালাদে পেঁয়াজ দিতে হলে টাটকা পেঁয়াজই দিতে হবে। পেঁয়াজ শুকনো স্থানে রাখুন। এতে বহুদিন ভালো থাকবে।
৫. কাঁঠাল
কাঁঠালেরও সমস্যা একই। ফ্রিজে কাঁঠাল রাখা মানে সেখানে থাকা সব খাবারই কাঁঠালের স্বাদযুক্ত হয়ে যাওয়া। তবে এয়ার টাইট পাত্র থাকলে তাতে কাঁঠালের কোষ ভরে ফ্রিজে রাখতে পারেন। তবে কাঁঠালের বোঁটা যদি সংরক্ষণ করতে পারেন, তবে স্বাভাবিক তাপমাত্রাতেও কয়েকদিন পর্যন্ত কাঁঠান স্বাভাবিক অবস্থায় সংরক্ষণ করতে পারবেন।
৪. কলা
ফ্রিজে কলা রাখা যায় না। এতে কলার টকটকে ত্বকে কালশিরে পড়ে যায় এবং তা বাদামী রং ধারণ করে। এ ছাড়া পাকা কলা ফ্রিজে রাখলে কলা দ্রুত আরো বেশি পেকে যাবে। ফলে ধরবে পচন। কলাও স্টার্চ চিনিতে পরিণত হয়। এ ধরনের ফল খেলে পাকস্থলীতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। কলা স্বাভাবিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়।
৫. কুমড়ো
রুমের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় কুমড়োর স্বাদ সবচেয়ে ভালো থাকে। এ ছাড়া স্বাভাবিকভাবে রাখলে এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের মাত্রা ভালো থাকে। তবে কুমড়োর পচন রোধ করে ফ্রিজ।
৬. অ্যাভোকাডো
অ্যাভোকাডো এমন একটি জিনিস যা ফ্রিজে পচে না। শক্ত অবস্থায় একটি অ্যাভোকেডো ফ্রিজে রাখার তিন সপ্তাহ পরও তা হুবহু ছিলো। তবে রুমের তাপমাত্রায় এটি সংরক্ষণ করুন। এতে একটু দ্রুত পেকে গেলেও তা থেকে অনেক সুন্দর গন্ধ বের হবে। অ্যাভোকাডো খুব দ্রুত অক্সিডাইজ হয় অনিয়মিতভাবে। তবে তা কাটার পর দ্রুত খেয়ে ফেলা ভালো। তবে ফ্রিজে রাখতে হলে অ্যাভোকাডোতে সামান্য লেবুর রস দিয়ে রেখে দিতে পারেন।
৭. রসূন
রসূন এমনিতেই অনেকদিন ভালো থাকে। রান্নাঘরেই পাক্কা দুই মাস রসূন দিব্যি ভালো থাকে। তবে রসূনের গোড়া কেটে ফেললে তা ১০ দিন পর্যন্ত ভালো থাকতে পারে। অন্যদিকে, ফ্রিজে রাখলে তা পেঁয়াজের মতোই বাজে গন্ধ ছড়াবে এবং ফ্রিজেই রসূন দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়।
0 মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।