সম্মানিত দর্শক আপনাকে স্বাগতম। আমাকে Facebook instagram Telegram এ পাবেন। কামরুলকক্স: পারমানবিক অস্ত্র কি এবং তা কোথায় পাওয়া যায়!

পারমানবিক অস্ত্র কি এবং তা কোথায় পাওয়া যায়!



১৯৪৫ সালে নাগাসাকিতে আণবিক বোমার 
বিষ্ফোরণের ফলে সৃষ্ট ব্যাঙের ছাতার মত মেঘ।

পারমানবিক অস্ত্র এমন এক ধরনের যন্ত্র যা নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ার ফলে প্রাপ্ত প্রচন্ড শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের সৃষ্টি করে। সে নিউক্লিয়ার বিক্রিয়া ফিসানের ফলে অথবা ফিসান ও ফিউশান উভয়েরই সংমিশ্রনেও সংঘঠিত হতে পারে। উভয় বিক্রিয়ার কারণেই খুবই অল্প পরিমাণ পদার্থ থেকে বিশাল পরিমাণে শক্তি নির্গত হয়। আধুনিক এক হাজার কিলোগ্রামের একটি থার্মো-নিউক্লিয়ার অস্ত্রের বিস্ফোরন ক্ষমতা প্রচলিত প্রায় ১ বিলিয়ন কিলোগ্রামের প্রচন্ড বিস্ফোরক দ্রব্যের চেয়েও বেশি। এভাবেই শুধুমাত্র প্রচলিত বোমার সমান আকারেরই একটি পারমানবিক বোমা দ্বারাই একটি শহরকে ধ্বংশ করে দেয়া যায়। পারমানবিক অস্ত্রকে ধরা হয় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের এক বোমা হিসেবে। একারণেই আন্তজার্তিক বিভিন্ন নিয়ম-নীতিমালা প্রনয়নে তাদের ব্যবহার ও নিয়ন্ত্রন সবসময়ই একটি আলোকিত বিষয় হয়ে দাড়ায়। যুদ্ধের ইতিহাসে ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় মাত্র দুটি পারমানবিক বোমা বিস্ফোরিত করা হয়েছিল। "লিটল বয়" এর প্রথম বোমাটি ৬ আগস্ট ১৯৪৫ সালে জাপানের হিরোশিমাতে এবং "ফ্যাট ম্যান" নামক দ্বিতীয় বোমাটি তিনদিন পর জাপানের নাগাসাকিতে নিক্ষেপ করা হয়। এর ফলাফল ছিল ভয়াবহ। প্রচন্ড বিস্ফোরন ও ক্ষতিকর আলো বিকিরনের কারণে তাৎক্ষনিকভাবে মারা গিয়েছিল প্রায় ১২০০০০ লোক এবং আয়নাইজিংয়ের ফলে ধীরে ধীরে আরো অসংখ্যা মানুষ মারা গিয়েছিল। এ বোমার বিস্ফোরন এবং কোন দেশের অস্ত্রভান্ডারে এ বোমার সংরক্ষণ খুবই বিতর্কিত একটি বিষয়। হিরোশিমা ও নাগাসাকির সেই বিস্ফোরনের পরেও এখন পর্যন্ত আরও প্রায় ২০০০ বার পরীক্ষামূলকভাবে এবং প্রদর্শনের জন্য এ বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। বর্তমানে পারমানবিক বোমার বিস্ফোরন ঘটিয়েছে এবং মুজুদে আছে এমন দেশগুলো হল যথাক্রমে - যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন, ভারত, পাকিস্তান। এছাড়া এটা ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করা হয় যে উত্তর কোরিয়া, ইজরাইলেও পারমানবিক অস্ত্র রয়েছে।

বিশ্বকে পারমানবিক অস্ত্র মুক্ত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশ ও সংগঠন এখন বেশ তৎপর হচ্ছে। কিন্তু  বিশ্বকে পরমাণু মুক্ত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশ ও সংগঠন তোরজোর শুরু রলেও তার সুফল শীঘ্রই পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। কিছুদিন আগে প্রকাশিত এক গবেষণা রিপোর্টে এ কথা বলা হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়, বিশ্বজুড়ে এখনো ৫ হাজারেরও বেশি পরমাণু অস্ত্র মোতায়েন রয়েছে। এ ছাড়া পরমাণু শক্তিধর দেশগুলো অস্ত্র পদ্ধতি নিয়ে নিত্যনতুন গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (সিপরি) এর রিপোর্টে বলা হয়, যে কোনো মুহূর্তে ব্যবহারের জন্য বিশ্বজুড়ে ৫ হাজারেরও বেশি পরমাণু অস্ত্র মোতায়েন রয়েছে। এসবের মধ্যে ২ হাজার অস্ত্র সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে। রিপোর্টে আরও বলা হয়, ব্রিটেন, চীন, ফ্রান্স, ভারত, ইসরাইল, পাকিস্তান, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের এ আট দেশ ২০ হাজার ৫০০ এর বেশি যুদ্ধবোমার মালিক। এর মধ্যে ২০১১ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত রাশিয়ার যুদ্ধবোমার পরিমাণ ১১ হাজার এবং মোতায়েন রয়েছে ২ হাজার ৪২৭টি। যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে ৮ হাজার ৫০০ যুদ্ধবোমা এবং মোতায়েনের পরিমাণ ২ হাজার ১৫০টি। রিপোর্টে বলা হয়, পরমাণু শক্তিধর এই আটটি দেশ তাদের পরমাণু কর্মসূচি আরও উন্নত কিংবা অব্যাহত রাখার বিষয়ে অঙ্গীকারাবদ্ধ। ফলে নিকট ভবিষ্যতে বিশ্বে অর্থপূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ ঘটার কোনো সম্ভাবনা নেই। 
সূত্রঃ এএফপি।

0 মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Comments করার জন্য Gmail এ Sign in করতে হবে।